ট্রাফিক ফিলোসফিঃ ট্রাফিক ফানেল স্ট্রাটেজি । ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়ানোর যত উপায় । পর্ব -২

ট্রাফিক ফানেল স্ট্রাটেজি পর্ব-১ এ ব্যসিক কিছু বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আজ আমরা ট্রাফিক ফানেলের আরও কিছু গুরুত্বপুর্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।

ট্রাফিক ফিলোসফি

আপনাকে যদি প্রশ্ন করি “আপনার পন্য বা সার্ভিস মার্কেটিং এর শেষ লক্ষ্য কি?

উত্তর খুব সহজ এবং সরল হবে – ট্রাফিক বাড়ানো এবং বিক্রি বাড়ানো।

তাহলে কিভাবে ট্রাফিক বৃদ্ধি করবেন ফ্রিতে?

এ প্রশ্নটিতেই উত্তর আগের মতই সহজ হবে – এসইও করে গুগলে র‌্যাংক করাবো এবং ফ্রিতে ওয়েবসাইটে ট্রাফিক পাবো।

তাহলে আপনি আপনার সাইট এসইও করে গুগল থেকে ট্রাফিক নিয়ে আসবেন। তাই না?

– জ্বী ঠিক বলেছেন। (আপনার সরল উত্তর)

কিন্তু আপনার মত আরো অনেকেই আছে যারা তাদের সাইটের জন্য এসইও করছে এবং গুগল #১ পজিশনে আনার চেষ্টা করছে। আপনি গুগলের #১ পজিশনে র‌্যাঙ্ক করলেন। এরপর আবার আপনার কম্পিটিটর আপনাকে সরিয়ে দিয়ে গুগলের #১ পজিশন দখল করবে।

একবার কি ভেবে দেখেছেন কখনও এসইও নামক এই কারচুপির খেলার কোন শেষ বিন্দু নিয়ে? গুগল র‌্যাংকের এই ইঁদুর দৌড় প্রতিযোগিতা অবিরতভাবে চলতে থাকে যার কোন শেষ লক্ষ্য নেই। আপনি র‌্যাঙ্ক করবেন। তারপর আরেকজন আপনাকে পিছনে ফেলে #১ পজিশন নিয়ে নিবে। এরপর আপনি তাকেই পিছনে ফেলে পজিশন ফিরে পাবেন। এভাবে চলতেই থাকবে।

এই ইঁদুর দৌড় প্রতিযোগিতা থেকে বের হয়ে আসুন এবং অনুসন্ধান করুন হাজারো পটেনশিয়াল ট্রাফিক উৎসের বিভিন্ন টেকনিক।

“You must understand that there is more than one path to the top of the mountain…”

Miyamoto Musashi (The Book of Five Rings)

ভুল বুঝবেন না আমাকে। আমি আপনার সাইট এসইও করে গুগল পজিশন অর্জনের বিপক্ষে কথা বলছি না। আমি শুধু বোঝানোর চেষ্টা করছি যে শুধুমাত্র SEO ই যেন আপনার একমাত্র ট্রাফিকের উৎস না হয়।

মনে করুন একটা বড় পাহাড়ের চূড়ায় উঠার জন্য ১০০টিরও বেশী রাস্তা রয়েছে। একটা রাস্তায় সবাই বেশীরভাগ মানুষই ব্যবহার করছে পাহাড়ে উঠার জন্য। অন্য রাস্তাগুলো মানুষজন ব্যবহার না করার জন্য অনুর্বর হয়ে গেছে। নতুন কেউ সেই পথে হাটলে তার সাথে পাহাড়ে উঠতে আপনি নিজেও অসংকোচবোধ করবেন। কিন্তু নতুন এই পথে সম্ভাবনা যেমন অনেক রয়েছে সেই সাথে সফলতার চুড়ায় আহরণ করাও অন্য বেশী সংখ্যক মানুষে পরিপুর্ন পথের চেয়ে অনেক সহজ।

আপনি যখন নিজে নিজে নতুন কোন পথে হাটবেন পাহাড়ে উঠার জন্য, আস্তে আস্তে আপনার পথেও লোক আসবে। একসময় দেখবেন নতুন এই পথটিও বেশ স্ট্যাবল হয়ে গিয়েছে।

এবার এই কল্পনার সাথে আপনার মার্কেটিং স্ট্রাটেজিকে তুলনা করুন। একটা রাস্তায় সবাই বেশীরভাগ মানুষই ব্যবহার করছে পাহাড়ে উঠার জন্য সেটি হল এসইও। আপনি যখন নতুন কোন মার্কেটিং স্ট্রাটেজি খুজে পাবেন, তখন আস্তে আস্তে সেটিও এক সময় স্ট্যাবল হবে। একসময় আপনার নিশকে বিভিন্ন উপায়ে ট্রাফিক জেনারেট করে ডোমিনেট করতে পারবেন।

সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারন

আমরা যখন আমাদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস মার্কেটিং এর বিভিন্ন পন্থা বের করি তখন সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারনে ব্যর্থ হই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। আসুন কয়েকটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করা করিঃ

১) মার্কেটিং এর লক্ষ্য

আপনার একটি প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক লক্ষ্য নির্দিষ্ট করা উচিত। আমি প্রাথমিক লক্ষ্য হিসেবে পন্য বা সার্ভিস বিক্রি করে অর্থ উপার্জনকেই বেশি প্রাধান্য দেই।

এরপর সেকেডারি বা মাধ্যমিক লক্ষ্য হিসেবে আপনার ব্র্যান্ডকে জনপ্রিয় করে তোলাকেই সেট করতে পারেন। ব্র্যান্ডকে সবার কাছে গ্রহনযোগ্য করার জন্য বিভিন্ন মার্কেটিং চ্যানেল ব্যবহার করে অডিয়েন্সের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা, ইমেইলের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন ইস্যুকে সমাধান করা প্রভৃতি কাজের একটি খসড়া তৈরী করতে হবে।

২) মার্কেটিং স্ট্রাটেজি

মার্কেটিং স্ট্রাটেজি বলতে সাধারণত পন্য বা সার্ভিস বিক্রয়, এর মার্কেট শেয়ার, ব্র্যান্ড সচেতনতা বা ব্র্যান্ডের মাধ্যমে অডিয়েন্সের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের পন্থাকে বোঝায়।

৩) চ্যানেল নির্ধারন

মার্কেটিং চ্যানেল সাধারণত পন্যের অডিয়েন্স কোন কোন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে তার উপর নির্ভর করে নির্ধারন করা হয়। যেমন ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, ফোরাম, সার্চ ইঞ্জিন প্রভৃতি।

৪) কৌশল

আমাদের লক্ষ্য নির্ধারন করলাম, স্ট্রাটেজি ঠিক করলাম এবং সেই সাথে স্ট্রাটেজি বাস্তবায়নের জন্য চ্যানেল নির্ধারন করালাম। এখন দরকার হল বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌছানো।

একটা উদাহরনের সাহায্যে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা যাক। মনে করুন একটি টি-শার্ট ব্র্যান্ডের জন্য আপনি মার্কেটিং প্লান করছেন। তাহলে নিম্নোক্ত উপায়ে আপনি স্ট্রাটেজি সেট করতে পারেন।

  • পন্যঃ টি-শার্ট
  • লক্ষ্যঃ টি-শার্ট বিক্রি এবং ব্র্যান্ডকে জনপ্রিয়করণ
  • মার্কেটিং স্ট্রাটেজিঃ ফেসবুক থেকে অর্গানিক ভিজিটর ওয়েব সাইটে প্রেরন
  • চ্যানেলঃ ফেসবুক
  • কৌশলঃ ফেসবুক গ্রুপ মার্কেটিং

মার্কেটিং এর চ্যানেল সীমিত সংখ্যক হতে পারে কিন্তু শত শত স্ট্রাটেজি এবং কৌশল রয়েছে প্রয়োগ করার জন্য। একটা চ্যানেলে সফল হলে অপর যে কোন চ্যানেলে একই স্ট্রাটেজি বা চ্যানেল অনুযায়ী কৌশল পরিরবর্তন করে অনায়াসে কাজ করা যায়।

যেমন ধরুন আপনি আপনি এসইও নিয়ে যখন কাজ করবেন। তখন চ্যানেল-গুগল, বিং, ইয়াহু, ইয়ানডেস্ক প্রভৃতি সার্চ ইঞ্জিনের জন্য কাজ করতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment