একবার একটু চিন্তা করুন তো, “ইন্টারনেট জগতে যদি গুগল বা ফেসবুক না থাকত তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটে কিভাবে ট্রাফিক আসত?”
আবার মনে করুন, এক সপ্তাহের জন্য ফেসবুকের সেবা আমাদের দেশে বন্ধ হয়ে গেল। তাহলে কি আপনার অনলাইন নির্ভর ব্যবসাও বন্ধ হয়ে যাবে? যদি আপনার উত্তর হ্যাঁ সুচক হয়, তাহলে ট্রাফিক ফানেল নিয়ে কাজ করা উচিত।
ট্রাফিক ফানেল নিয়েই আজকের আয়োজন। এটি সিরিজ আকারে হবে। ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়ানোর বিভিন্ন উপায় জানতে পারবেন। আমি এই ফানেলের নাম দিয়েছিঃ
” ট্রাফিক স্পার্ক স্ট্রাটেজি (Traffic Spark Strategy)”.
অনলাইন মার্কেটিং সম্পর্কে আপনার পূর্বের ধারনা এই মুহুর্তে ভুলে যান। যদি আপনার একটি ওয়েবসাইট থাকে , তাহলে তার ট্রাফিকও থাকবে সেটা যে কোন ক্যাটাগরিরই হোক না কেন। কিছু রাস্তা দেখিয়ে দিব, যে রাস্তায় হাটলে ট্রাফিকের প্রবাহ সৃষ্টি হবে। ভিজিটরের সেই প্রবাহকে আপনার ওয়েবসাইটে কিভাবে ত্বরান্বিত করবেন সেটা নির্ভর করবে আপনার ক্রিয়েটিভিটির উপর।
ভিজিটর ফানেলের গভীরে প্রবেশের আগে চলুন আমরা মার্কেটিং সংক্রান্ত কিছু বিষয়গুলো জেনে নেই।
যে কোন পদ্ধতিতে ওয়েবসাইটের ভিজিটর আপনার সাইটে পাওয়ার জন্য ৪ টি বিষয় সব সময় মনে রাখতে হবে।
১) ওয়েবসাইটের কনটেন্ট হবে ভাল মানের এবং ভিজিটর উপযোগী
মার্কেটিং স্ট্রাটেজি তখনই ভালভাবে কাজ করবে যখন আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্ট হবে ভিজিটর উপযোগী। আমরা বেশীরভাগ সময় ভিজিটরদের কথা মাথায় না রেখে শুধুমাত্র গুগলে র্যাংক করানোর উপযোগী কনটেন্ট তৈরী করে থাকি।
ফলে ভিজিটর সাইটে একবার আসলেও আপনার সাইটের কনটেন্ট ভাল না হওয়ার কারনে সে ফিরে যাবে।
ওয়েবসাইটের প্রতিটি ট্রাফিকই গুরুত্বপুর্ন। কারন সঠিক পদক্ষেপে একসময় তারাই আপনার পন্য বা সার্ভিসের ক্রেতা হবেন। তাই তাদের মন জয় করার যত উপায় রয়েছে সেটি আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্টের মাধ্যমে প্রকাশ করতে হবে।
২) সরাসরি যোগাযোগের জন্য ইমেইল, মোবাইল নাম্বার অথবা অন্য কোন মাধ্যম সংগ্রহ করা
আপনি যখন গবেষনালব্ধ ভাল মানের কনটেন্ট ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবেন, ভিজিটরের সাথে আপনার একটা বন্ধন তৈরী হবে। সেই বন্ধনকে স্থায়ী রুপ দিতে আপনাকে তাদের সাথে সরাসরি মার্কেটিং মেসেজ দেওয়ার জন্য অনুমতি নিতে হবে। সেই অনুমতিকেই আমরা সাধারণত ইমেইল মার্কেটিং বলে থাকি।
আপনি খুব সহজেই তাদের ইমেইল এবং মোবাইল নাম্বার পেতে পারেন যদি আপনার ওয়েব সাইটের কনটেন্ট দিয়ে তাদেরকে খুশি করতে পারেন। আপনার প্রতি আস্থা তৈরী হবে তাদের।
৩) লক্ষ্য হতে হবে সুনির্দিষ্ট (Have a clear defined GOAL)
আপনি কিভাবে ট্রাফিক জেনারেট করবেন সাইটে সে বিষয়ের চেয়ে বেশী গুরুত্বপুর্ন হল, এই ট্রাফিক দিয়ে আপনি কি করবেন সেটার উত্তর আগে থেকেই জানা। আপনার লক্ষ্য যদি কোন পন্য বিক্রি করা, তাহলে আপনার ওয়েবসাইটকে সেই উপযোগী করে সাজাতে হবে। সাইটের প্রতিটি পেজকেই সাজাতে হবে আপনার লক্ষ্য পুরনের জন্য।

যখন আপনি নির্ধারিত মাইন্ডসেট এবং প্রতিটি লক্ষ্য পুরনের জন্য ওয়েবসাইট সাজাবেন, তখন এটি টার্গেটেড কাস্টমার আসতে লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরী করবে। যদি এই ফাউন্ডেশন তৈরী ছাড়াই ভিজিটর জেনারেট করা শুরু করে দেন, তাহলে আপনার শ্রুম অনেকাংশে ব্যর্থ হবে।
৪) টার্গেটেড ট্রাফিক বিভক্তকরন (Tagrgeted Traffic Segmention)
এটা সচারচর বলা হয়ে থাকে যে ” Segmenting your target audience is key”. ভিজিটরদের পছন্দ-অপছন্দ, বয়স, স্থান, শখ প্রভৃতি মাপকাঠিতে আলাদা আলাদা লিষ্ট করা অতীব জরুরী একটা কাজ। যখনি আপনি এ লিষ্টে কোন একজনকে যোগ করবেন অবশ্যই তার নিম্নোক্ত বিষয়গুলো প্রাধান্য দিবেনঃ
- সে ছেলে নাকি মেয়ে
- তার বয়স
- সে কোন প্লাটফর্মে বেশী অ্যাকটিভ থাকে (যেমন ফেসবুক, ইউটিউব, ইন্সটাগ্রাম, টিকটক প্রভৃতি)
- লোকেশন
- শখ
এটি কিভাবে করা যায় আমরা হয়ত পরবর্তী কোন এক পর্বে শিখব।
অডিয়েন্সকে কেন বাছাই করা জরুরী?
ধরুন আপনার কাছে একটা ট্রাফিক লিষ্ট আছে যা নিম্নরুপঃ
- ট্রাফিক সংখ্যাঃ ২০ হাজার
- লিঙ্গঃ ছেলে
- বয়সঃ ২০-৩০ বছর
- বৈবাহিক অবস্থাঃ অবিবাহিত
- শখঃ ভ্রমণ
- পছন্দঃ বই পড়া, বন্ধুদের সাথে আড্ডা
- প্লাটফর্মঃ ফেসবুক এবং ইন্সটাগ্রামে বেশী অ্যাকটিভ থাকে
এখন এই ট্রাফিকের ধরন অনুযায়ী আপনি কিন্তু ভবিষ্যতে তাদের পছন্দ অনুযায়ী অন্যান্য পন্য বা সার্ভিসও বিক্রি করতে পারবেন। কাজেই যদি যথাযতভাবে ট্রাফিক সেগমেন্ট করতে পারেন, তাহলে আপনার ব্যবসার সফলতা অনেকাংশে বেড়ে যাবে।
আরোও পড়ুন